মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ১১:২৫ পূর্বাহ্ন

সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের ৫৩৪৩ কোটি টাকা

সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের ৫৩৪৩ কোটি টাকা

স্বদেশ ডেস্ক: সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে গত বছর বাংলাদেশিদের আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকা। আগের বছর ছিল ৪ হাজার ৬৯ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে জমার পরিমাণ বেড়েছে ১ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের (এসএনবি) ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোর গ্রাহকদের তথ্য গোপন করার আইন অনেক কঠোর। তবে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক চাপে কিছু কিছু তথ্য প্রকাশ করছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কোন দেশের নাগরিকদের কত অর্থ জমা আছে তা প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করা হয়। তবে একক অ্যাকাউন্টের তথ্য প্রকাশ করা হয় না। সুইজারল্যান্ডে ব্যাংকের সংখ্যা ২৪৮টি। গ্রাহকের নাম-পরিচয় গোপন রাখতে কঠোর তারা। ধারণা করা হয়, অবৈধ আয় ও কর ফাঁকি দিয়ে জমানো অর্থ এখানে রাখা হয়।

সর্বশেষ গতকাল এসএনবির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ২০১৮ সালের প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশিদের আমানত দাঁড়িয়েছে ৬১ কোটি ৭৭ লাখ সুইস ফ্রাঁ; দেশি মুদ্রায় ৫ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা (প্রতি ফ্রাঁ ৮৬ দশমিক ৪১ টাকা ধরে)। এক বছর আগে এ অঙ্ক ছিল ৪৮ কোটি ১৩ লাখ ফ্রাঁ বা ৪ হাজার কোটি টাকা।

সুইস কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘোষণা অনুযায়ী, কোনো বাংলাদেশি নাগরিকত্ব গোপন রেখে অর্থ জমা রাখলে ওই অর্থ এ হিসাবে অন্তর্ভুক্ত নয়। গচ্ছিত রাখা স্বর্ণ বা মূল্যবান সামগ্রীর আর্থিক মূল্যমানও হিসাব করা হয়নি এ প্রতিবেদনে। এ পর্যন্ত যে হিসাব পাওয়া যায়, তাতে ২০১৬ সাল পর্যন্ত টানা ছয় বছর বাংলাদেশিদের আমানত বাড়ে সুইস ব্যাংকে। মাঝে ২০১৭ সালে আমানতের পরিমাণ কমলেও গত বছর বেড়েছে। বাংলাদেশিদের জমার অর্থের পরিমাণ বাড়লেও সামগ্রিকভাবে ২০১৮ সালে আমানত কমেছে সুইস ব্যাংকগুলোয়।
সুইজারল্যান্ডে গোপনীয়তা কমায় অনেকে এখন অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ জমা রাখার জন্য ঝুঁকছেন লুক্সেমবার্গ, কেম্যান আইল্যান্ড, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, পানামা কিংবা বারমুডার মতো ট্যাক্স হ্যাভেনের দিকে।

এদিকে ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) ‘২০০৬ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত উন্নয়নশীল দেশ থেকে অবৈধভাবে অর্থ পাচার’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশ থেকে ২০১৫ সালে ৫৯১ কোটি ৮০ লাখ ডলার পাচার হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৫০ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)। ২০০৬ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এক দশকে সর্বমোট পাচার হয়েছে ৬ হাজার ৩২৮ কোটি ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫ লাখ ৩৭ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। আমদানি-রপ্তানির আড়ালে ব্যাংকের মাধ্যমে বেশিরভাগ অর্থ পাচার হয়েছে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার হয় প্রধানত দুটি কারণে। এখানে অর্থ রাখা নিরাপদ মনে করেন না। দ্বিতীয় বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নেই। এখানে ব্যবসা শুরু করা এবং টিকে থাকা বিভিন্ন কারণে অনেক চ্যালেঞ্জিং। মূলত এ দুটি কারণেই অর্থ পাচার হচ্ছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877